টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম - চুক্তিপত্র কিভাবে লিখতে হয়

টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে আপনি যদি জানতে চান তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র লেখার আগে আপনাকে জানতে হবে কত টাকার স্ট্যাম্পের চুক্তিপত্র লিখতে হয়। আপনি হয়তো অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন এ বিষয়ে সঠিক তথ্য পাননি।
টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম

আপনাদের এসব কথা চিন্তা করে আজকে আমি আপনাদেরকে জানাবো চুক্তিপত্রে কি কি লিখতে হয়! কিভাবে লিখতে হয়? চুক্তিপত্রে কার কার স্বাক্ষর নিতে হয় এর বিস্তারিত।
DMCA

টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র কি

টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র লেখার আগে আমাদেরকে জানা উচিত টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র কি। আমি যদি টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র লেখার আগে আমরা যদি জেনে নেই টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র কি তাহলে আমাদের জন্য চুক্তিপত্রটি লেখা আরও সুবিধা হবে।

ধরুন আপনি একজন ব্যক্তিকে টাকা ধার দিতে চান কিংবা একজন ব্যক্তি আপনার কাছ থেকে টাকা ধার নিতে চাচ্ছে। আপনি হয়তো অনেক টাকা লেনদেন করতে চাচ্ছেন তার সঙ্গে এবং আপনার হয়তো বিশ্বাস হচ্ছে না এবং তাকে আপনি বিশ্বাস করতে পারছেন না যে আসলেই সে টাকা নিয়ে ফেরত দিবে কিনা। এরকম যদি কোন সন্দেহ থাকে তাহলে আপনি তাকে টাকা ধার দেওয়ার আগে তাকে যে লিখিতভাবে টাকা দিবেন সেটাই হচ্ছে টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র।

আপনি যদি চুক্তিপত্র লেখার পর তার থেকে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর নেন এবং আরো অন্যান্য যাদের স্বাক্ষর লাগবে তাদের থেকে যদি আপনি স্বাক্ষর নেই তাকে টাকা দেন পরবর্তীতে তখন যদি সেই টাকা ফেরত না দিতে চায় তাহলে আপনি তারপর মামলা করতে পারবেন এই চুক্তিপত্র দিয়ে। এতে করে আপনার টাকাটি আপনি খুব সহজেই ফেরত পাবেন।

আপনি যদি এই চুক্তিপত্র তৈরি না করে কাউকে অনেক টাকা ধার দেন তাহলে আপনার সেই টাকা তুলতে অনেক কষ্ট হবে। এবং আপনি যাকে টাকা দিয়েছেন সে আপনার সেই টাকা ফেরত নাও দিতে পারে এজন্য আপনার উচিত টাকা ধার দেওয়ার আগে কোন টাকা লেনদেন করার আগে একটি চুক্তিপত্র লেখার।

আমি আপনাদেরকে এখন সেটি দেখাবো কিভাবে আপনি একটি চুক্তিপত্র তৈরি করবেন টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে। এবং সেই চুক্তিপত্রে কার কার স্বাক্ষর নিতে হয় এবং আপনি কত টাকার স্ট্যাম্পে সেই চুক্তিপত্রটি লিখবেন এবং কিভাবে আপনি সেই টাকা ফেরত পাবেন তার সম্পূর্ণ প্রসেস আমি আপনাদেরকে এখন জানাবো।

কত টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র লিখতে হয় এবং কার কার স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়

চুক্তিপত্র লেখার আগে আমাদেরকে জানতে হবে কত টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র দেখতে হয়। টাকা লেনদেন বা টাকা ধার দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনি ৩০০ টাকার নল জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র লিখতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি একশ টাকার তিনটা স্ট্যাম্প ব্যবহার করতে পারেন। আবার বিশেষ ক্ষেত্রে বা কোন কোন ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ঘটতে পারে।

স্ট্যাম্প নেওয়ার পর এবং সেখানে যে টাকা দিবে এবং যে টাকা গ্রহণ করবে গ্রহীতা এবং দাতা দুই পক্ষকেই স্বাক্ষর করতে হবে প্রত্যেকটা স্থানে। এবং আপনি চাইলে সাক্ষী প্রমাণের স্বাক্ষর নিতে পারেন। কিন্তু স্ট্যাবের সবার উপরে অবশ্যই ডাটা এবং গ্রহীতার দুইপক্ষেরই স্বাক্ষর থাকতে হবে। আমি আবার উপরে রাখি প্রত্যেকটা স্ট্যাম্পের পাতায় দাতা এবং গ্রহীতার দুই পক্ষেরই স্বাক্ষর থাকতে হবে।

টাকা ধারের চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম। চুক্তিপত্র কিভাবে লিখতে হয়

তো আমরা এতক্ষণ জানলাম কত টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র লিখতে হয়। এবং কার কার স্বাক্ষর থাকা প্রয়োজন এবং চুক্তিপত্র কি তার বিস্তারিত। এখন আমরা দেখব টাকা ধার দেয়ার চুক্তিপত্রে কি কি লিখতে হয় কি কি উল্লেখ থাকতে হয় কি কি থাকলে আপনি ভবিষ্যতে সেই টাকা তুলতে পারবেন তার বিস্তারিত। এবং কিভাবে লিখতে হয় সেটুকু আপনারা এখন জানবেন।

প্রথমেই আপনাকে সবার উপরে বড় অক্ষরের করছেন কর্জ নামা চুক্তিপত্র লিখতে হবে। তারপরে এর নিচে প্ল্যান থেকে শুরু করবেন প্রথম পক্ষের মানে যে ঋণ দেবে তার বিস্তারিত। যেমন প্রথম প্রথম পক্ষের বা ঋণদাতার নাম পিতার নাম মাতার নাম বর্তমান ঠিকানা ইত্যাদি আরো বিস্তারিত অনেক কিছু উল্লেখ করা থাকবে প্রথম পক্ষের। এবং এর সাথে প্রথম পক্ষের দাতার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার এবং জন্মতারিখ থাকতে হবে।


এরপর দ্বিতীয় পক্ষ হিসাবে ঋণ গ্রহীতার ডিটেলস বা ঠিকানা বিস্তারিত উল্লেখ করা থাকবে। যেমন দ্বিতীয় পক্ষের বা ঋণ গ্রহীতার বর্তমান ঠিকানা। এবং দ্বিতীয় পক্ষের নাম বাবার নাম মাতার নাম ইত্যাদি আরও অনেক বিষয় থাকতে হবে দ্বিতীয় পক্ষের ঠিকানা হিসেবে বা যেন আপনারা বুঝতে পারেন যে তার নাম কি বাসা কোথায় তার ঠিকানা কি তার সম্পর্কে যাতে করে বিস্তারিত বোঝা যায়।

দ্বিতীয় পক্ষের সমস্ত তথ্য বা ঠিকানা বা দ্বিতীয়পক্ষের সম্পর্কে সকল তথ্য থাকতে হবে। এখানে দ্বিতীয় পক্ষ বলতে বোঝানো হয়েছে যে টাকাটি গ্রহণ করবে যে টাকাটি ধার হিসাবে নিচ্ছে। এর সঙ্গে অবশ্যই জন্মতারিখ এবং জন্ম নিবন্ধন বা ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার উল্লেখ করা থাকতে হবে।

এরপর নিচে একটি মূল বয়ান দিতে হবে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আপনার যদি এই মূল পয়েন্টটি না থাকে তাহলে আপনি কখনোই আপনার এই চুক্তিপত্র সম্পন্ন করতে পারবেন না এবং পরবর্তীতে আপনি তার থেকে কোন টাকা আদায় করতে পারবেন না। এজন্য অবশ্যই নিচের মূল বয়ানটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পরম করুণাময়ী আল্লাহর নাম স্মরণ করিয়া কর্জ নেওয়ার চুক্তিপত্র দলিলের আইনানুগ বয়ান আরম্ভ করতেছি। যেহেতু আমি প্রথম পক্ষ কর্জ দেবার প্রস্তাব করিলে ২য় পক্ষ তাহা নিম্ন বর্ণিত শর্তাবলী মোতাবেক নিতে রাজি হয়।

আমি উপরোক্ত যে কথাগুলি বললাম এখানে সব সাজিয়ে গুছিয়ে দেওয়া আছে আপনি এভাবে একটি চুক্তিপত্র লেখতে পারেন।
\
টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম

                                                                    পাতা ২য়
উপরোক্ত এই পর্যন্ত প্রথম পাতায় লিখতে হবে এরপর আপনাকে দ্বিতীয় পাতায় শর্ত বলি লিখতে হবে। এরপর উপরে অবশ্যই তাতা এবং গ্রহীতার দুজনেরই স্বাক্ষর থাকতে হবে। নিচের শর্তগুলি লেখার নিয়ম দেয়া হলো।

প্রথমে আপনি যে তারিখে গ্রহীতাকে টাকা দিবেন সেই তারিখটি প্রথমেই লিখবেন। যেমন এটি হতে পারেঃ উক্ত চুক্তিপত্র ২৬/০১/২০০৪ ইং তারিখ থেকে কার্যকর হইবে।

এরপর দ্বিতীয়টি হচ্ছে যে কারণে গ্রহীতা টাকা নিচ্ছে সেই কারণটি এবং কত টাকা নিচ্ছে এবং কত টাকা মাসিক লভ্যাংশ আকারে থাকবে বা ধার্য করা হচ্ছে। এবং লভ্যাংশ টাকাটি কত তারিখের মধ্য থেকে কত তারিখের মধ্যে হবে এই গুলি লেখা থাকবে এখানেই মূল কথা আপনার লিখতে হবে। আপনি যদি এ কথাটা লিখতে না পারেন তাহলে আপনি নিজের দেওয়া ছবিতে দেখে দেখে এরকম একটা আইডিয়া তৈরি করে লিখতে পারেন।

উপরোক্ত এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ শর্ত থাকবে যে শর্তগুলি আপনাকে দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় উল্লেখ করতে হবে। এবং সেখানে কি কি উল্লেখ করতে হবে সেটির নিচে একটি নমুনা দেয়া হলো। আপনি এই নমুনা বা অনলিপি দেখে নিজের মতো করে লিখতে পারবেন।

টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম
এরপর উপরোক্ত সবকয়টি শর্ত লেখার পর সবার নিচে এসে আপনি তার একটি ব্যাংক চেক নিবেন এবং যখন সে টাকাটি ফেরত দিবে তখন আপনি তাকে সেই ব্যাংক একাউন্টের চেকটি ফেরত দিবেন। কারণ আপনি যদি ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তিনামা লিখেন তাহলে আপনি তার কাছ থেকে টাকা আদায় করতে পারবেন না।


এবং আদায় করতে পারলেও অনেক সময় সাপেক্ষ যা আপনার অনেক সময় নষ্ট করবে এবং আপনার অনেক দৌড়াদৌড়ি খরচ করতে হবে। এর জন্য সেখান থেকে টাকা তোলা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। আপনি যখন তাকে টাকা দিবেন তখন ব্যাংক একাউন্টের চেক নিবেন। এটা করে আপনার টাকাটি তুলতে আরও সুবিধা হবে। অবশ্যই চেক এর ইনফরমেশন বা তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ আপনি যখন তার থেকে এইসব তথ্য নিয়ে আপনার স্ট্যাম্পের স্বাক্ষর দিয়ে নিবেন তখন পরবর্তীতে যদি সে টাকা দিতে না যায় তার ওপর একটি বড় ধরনের মামলা করতে পারবেন এতে করে সে টাকা দিতে বাধ্য থাকবে।

এরপর আপনি এখান থেকে তৃতীয় পৃষ্ঠায় এসে আপনি উপরোক্ত যে দুইটি পৃষ্ঠা ব্যবহার করেছেন সেই দুটি পৃষ্ঠার উল্লেখ করবেন তৃতীয় পৃষ্ঠায় এসে এবং ইস্টার্ন নাম্বার সহ স্ট্যাম্পের আরো বিস্তারিত তথ্য আপনি এখানে উল্লেখ করবেন।

এরপর এর নিচে যদি আপনার জামিনদার থাকে জামিনদারের অঙ্গীকারনামা আপনি লিখে রাখবেন। এবং জামিনদারের সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনি সেখানে লিখে রাখবেন। যেমন জামিনদারের বর্তমান ঠিকানা মাতার নাম পিতার নাম তার নাম ভোটার আইডি কার্ডের বা জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার জন্ম তারিখ ইত্যাদি।

এবং আপনাদের শেষ কথাটি এখানে উল্লেখ করতে হবে এরপর সবার নিচে যে টাকাটি গ্রহণ করছে তার স্বাক্ষর নিবেন। দাতা এবং গ্রহীতা দুইজনেরই স্বাক্ষর গুরুত্বপূর্ণ। নিচে একটি নমুনা ছবিতা হলো।
টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম

আমাদের শেষ কথা

আমরা এতক্ষণ জানলাম টাকার ল্যান্টিনে চুক্তিপত্র কিভাবে লিখতে হয় কাউকে টাকা ধার দিতে গেলে কিভাবে চুক্তিপত্র লিখতে হয় তার বিস্তারিত এবং চুক্তিপত্র দেখতে কার কার স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয় এবং চুক্তিপত্র সম্পর্কে আরো অনেক বিস্তারিত জেনেছি। এ বিষয়ে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন কারণ আমরা প্রত্যেকের কমেন্টের রিভিউ করি ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
1 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • CHRISTIN
    CHRISTIN March 22, 2024 at 2:23 PM

    সুন্দর তথ্য

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইভিভিটিভি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url