ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা ও অসুবিধা
আপনি হয়তো ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন? এজন্য আপনি ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জানতে চান। আজকে আমি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনার যদি প্রশ্ন থাকে ইসলামিক ব্যাংকের সুবিধা ও অসুবিধা কি? তাহলে এই পোস্টটির সম্পূর্ণ পড়ুন।
আপনি যদি আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে অনেক ধারণা পাবেন। যেগুলি আপনার কাজে আসবে।
সূচিপত্র ঃ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা ও অসুবিধা
ইভিভিটিভি
ভূমিকা
আমাদের উচিত কোন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট তৈরি করার আগে সেই ব্যাংকের সুবিধা এবং অসুবিধা এবং শর্ত সম্পর্কে জানা। কারণ এগুলি জানার মাধ্যমে আমরা ব্যাংক থেকে অনেক ধরনের সুবিধা পাব। এবং আমাদের জন্য নির্বাচন করা সহজ হয়ে যাবে কোন ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি করা উচিত। তাই আপনি যেহেতু ইসলামী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য ইসলামী ব্যাংকের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে জানতে চান। তাই আপনি এই পোস্টটির সম্পূর্ণ পড়ুন।
এবং আমরা এই পোস্টে আরো জানব ইসলামী ব্যাংকের একাউন্ট কয় ধরনের হয়ে থাকে। এবং আমরা এই পোস্টটির মাধ্যমে আরো জানবো এই অ্যাকাউন্টগুলো খোলার জন্য কি কি প্রয়োজন হতে পারে। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা ও অসুবিধা
আমি এখন আপনাদেরকে জানাবো ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে। কিন্তু ইসলামী ব্যাংক একাউন্টের সুবিধা অসুখ বিধা জানার আগে আপনাকে জানতে হবে ইসলামী ব্যাংক এ কয় ধরনের একাউন্ট তৈরি করা যায়? ইসলামী ব্যাংক একাউন্টে মূলত তিন ধরনের অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যায়। যেমনঃ
- স্টুডেন্ট একাউন্ট
- সেভিং একাউন্ট
- কারেন্ট একাউন্ট
আপনি উপরোক্ত এই তিনটি ক্যাটাগরিতে ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। উপরোক্ত একটি ক্যাটাগরিতেই আপনি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন। আমরা জানলাম ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট কয় ধরনের। এখন আমরা জানবো এই তিন ধরনের অ্যাকাউন্ট গুলোর কোনটির কি সুবিধা এবং অসুবিধা সেই সম্পর্কে। এবং আমরা আরো জানবো এই অ্যাকাউন্টগুলো তৈরি করার জন্য কি কি প্রয়োজন আপনার কি কি ডকুমেন্ট থাকার প্রয়োজন।
ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্টে সুবিধা
ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্টে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা রয়েছে। নিচে সেই সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
- চার্জ ফ্রি ভিসা - রেপিড ডেবিট কার্ড
- সেলফিন অ্যাপস
- ইন্টারনেট ব্যাংকিং
- ফ্রি এসএমএস নোটিফিকেশন সার্ভিস
- সাহায্যের জন্য ২৪ ঘন্টা হেল্পলাইন
চার্জ ফ্রি ভিসা - রেপিড ডেবিট কার্ড
আপনি এই ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্টটি খোলার পর সেখানে আপনি চার্জ ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে নিজেই সব ধরনের লেনদেন করতে পারবেন।
সেলফিন অ্যাপস
আপনি সেলফিন অ্যাপস ব্যবহার করতে পারবেন স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার পর। এবং আপনি নিজেই সেখান থেকে ঘরে বসে যে কোন লেনদেন এবং আপনার হিস্টরি চেক করতে পারবেন।
ইন্টারনেট ব্যাংকিং
ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্টে ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর সুবিধা রয়েছে। এতে করে আপনি দূরবর্তী যে কোন স্থান থেকে আপনার অ্যাকাউন্টটি ম্যানেজমেন্ট করতে পারবেন।
ফ্রি এসএমএস নোটিফিকেশন সার্ভিস
ইসলামিক ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট এর সকল লেনদেন এর নোটিফিকেশন থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু যখন আপনাকে তারা নোটিফিকেট মানে নোটিফিকেশন দেবে এর জন্য সেই ব্যাংকের চার্জ রয়েছে। আপনি ইসলামী ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার পর ফ্রি নোটিফিকেশন বা এসএমএস সার্ভিসটা পাবেন।
সাহায্যের জন্য ২৪ ঘন্টা হেল্পলাইন
আপনি যদি ইসলামিক ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি করার পর যে কোন সমস্যায় পড়েন এবং যেকোনো সময় যদি আপনার কোন সাহায্যের প্রয়োজন হয় এবং আপনি যদি তাদেরকে জানিয়ে দেন তাহলে আপনার সে সমস্যাটি সাথে সাথে সমাধান করার চেষ্টা করে। এবং তারা সবসময় একটিভ থাকে আপনাকে হেল্প করার জন্য। এতে করে আপনার একাউন্টে আরো মজবুত এবং সিকিউর নিরাপদে থাকে।
আমরা এতক্ষণ ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্টে কয়েকটি সুবিধা জানলাম। এখন আমরা আরো কয়েকটি সুবিধা সম্পর্কে জানবো যেগুলি আপনার জানা প্রয়োজন।
এখানে একাউন্ট তৈরি করার সময় অবশ্যই প্রথমে সর্বনিম্ন আপনাকে ১০০ টাকা জমা দিতে হবে আপনার একাউন্টে। আপনি যদি ১০০ টাকা জমা দেন তাহলে আপনার সেই একাউন্টে একটিভ হবে না আপনার একাউন্টে এক্টিভ করার জন্য সর্বনিম্ন ১০০ টাকার প্রয়োজন।
কারা ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে পারবেন?
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হলে বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। এ কারণে আপনাকে জানতে হবে তারা ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন? ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য তিনটা শর্ত লাগে। সেগুলো হল প্রথমে আপনাকে একজন না বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে। আপনার বয়স সর্বনিম্ন ১৮ এবং সর্বোচ্চ ৩০ হতে হবে। আপনার যয়স যদি ৩০ এর বেশি হয় তখন আপনি আপনার েএকাউন্টটিকে সেভিংস এবং কারেন্ট একাউন্ট এ পরিবর্তন করতে পারবেন নিয়ম অনুযায়ী।
ইসলামী ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট এর অসুবিধা
- আপনি যদি ইসলামী ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলেন তাহলে সেখানে আপনার অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট সমালোচনা থাকবে যেমন আপনার স্টুডেন্ট কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে আপনার ব্যাংক এর সমস্যা হতে পারে।
- ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণের টাকা ঢোকাতে পারবেন এবং বেরোতে করতে পারবেন। প্রতিমাসে এক লক্ষ টাকা আপনার ব্যাংকে ঢুকাতে পারবেন এবং বের করতে পারবেন। বিভিন্ন ব্যাংকের ক্ষেত্রে এটি আলাদা হয়ে থাকে।
ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে
ইসলামিক ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আপনার যে সমস্ত কাগজের প্রয়োজন সেগুলোই নিচে দেওয়া হলঃ
- সর্বনিম্ন ১৮ বছর বয়স হতে হবে
- আপনার জন্মনিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয় পত্র বা পাসপোর্ট প্রয়োজন
- এরপর আপনার দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি লাগবে
- এবং অবশ্যই আপনার স্টুডেন্ট আইডি কার্ড অথবা প্রত্যয়ন পত্র রাখবেন/এর সঙ্গে আপনার পরীক্ষার সার্টিফিকেট এর ফটোকপি ও প্রয়োজন হবে।
- নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্র এবং নমিনের এক কপি ছবি
- অবশ্যই আপনার বাসার বিল অথবা বিদ্যুৎ বিল অথবা ক্যাশ বিল এর কাগজ
- এবং সক্রিয় একটি মোবাইল নাম্বার
ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট খোলার সুবিধা
- ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট তৈরি করার আগে প্রথমে আপনাকে সেই সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে চলুন জেনে ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট খোলার সুবিধা।
- ইসলামি ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্টের জন্য প্রতিমাসে ৭.৫% ভ্যাট কেটে থাকে ইসলামী ব্যাংক। কিছুটা ৫৭ টাকার মতো। এবং ৩.৭% হারে মুনাফা দেওয়া হয় প্রত্যেক সেভিংস একাউন্ট খোলার ইউজাার দের।
- এবং আপনি এই ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট খোলার আরও যদি সুবিধা জানতে চান তাহলে আপনি ইসলামী ব্যাংক একাউন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার অসুবিধা
- ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি অসুবিধা রয়েছে। অসুবিধা সম্পর্কে আপনি যদি ভালোভাবে জানতে চান তাহলে আপনি এই বিষয়টা নিয়ে ইউটিউবে সার্চ দিতে পারেন।
ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য কি কি প্রয়জন
আপনি যদি ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খুলতে চান তাহলে আপনার কিছু কাগজের প্রয়জন আছে।
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- সার্টিফিকেট থাকলে সার্টিফিকেট বা শিক্ষা যোগ্যতা
- জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন
- আপনার পেশা অথবা আপনার প্রতিষ্ঠানের দলিল অথবা কারেন্ট বিল এর কাগজ।
- ৫০০ টাকা একাউন্ট একটিভ করার জন্য এটি বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হতে পারে।
ইসলামী ব্যাংকে কারেন্ট একাউন্ট খোলার সুবিধা
ইসলামী ব্যাংকে কারেন্ট একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে অনেক ধরনের সুবিধা রয়েছে তার মধ্যে হল ইন্টারনেট ব্যাংকিং, বৈধ্য লেদেন করার একটি সুরুক্ষিত অবস্থান। এর মত আরও অনেক সুবিধা রয়েছে সেগুলি আপনি ইসলামিক ব্যাংকের কারেন্ট একাউন্ট খুলে পাবেন। আপনি যদি তাদের সুবিধা সম্পর্কে ঠিক মত জানতে চান এবং নতুন তথ্য এবং আপডেট তথ্য পেতে চান তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আরো পড়ুন : ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য কি কি প্রয়োজন
- ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- কারেন্ট বিল এর কাগজ অথবা আপনার বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের দলিলের ফটোকপি
- জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন
- নমিনের স্বাক্ষর নমিনির নাম এবং নমিনির জন্ম নিবন্ধন অথবা জাতীয় পরিচয় পত্র
- আপনি যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনার সার্টিফিকেট বা শিক্ষা যোগ্যতা মূল সনদের ফটোকপি।
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ / ক্লোজিং চার্জ
আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলেন এবং পরবর্তী সময় যদি আপনার মনে হয় আমি আর ইসলামিক ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহার করব না সে ক্ষেত্রে আপনি ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ করতে পারবেন। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ করার জন্য কিছু চার্জ রয়েছে। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ / ক্লোজিং চার্জ একাউন্ট অনুযায়ী বিভিন্ন হতে পারে। কারেন্ট একাউন্ট এর ক্ষেত্রে ৩০০ টাকা, সেভিংস একাউন্ট ২০০ টাকা, অন্যান্য সার্ভিস এবং ফ্রিকোয়েড একাউন্টের জন্য ৩০০ টাকা চার্জ কাটা হবে। তবে এটা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হতে পারে।
আরো পড়ুন: ফরেক্স ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ
একাউন্ট মেনটেনেন্স চার্জ
ইসলামি ব্যাংক একাউন্ট মেনটেনেন্স চার্জ রয়েছে। আপনি যদি আপনার একাউন্টে ৫০০০ টাকা রাখেন তাহলে কোন প্রকার একাউন্ট থেকে চার্জ কাটা হবে না। যদি আপনি ৫০০১ টাকা থেকে শুরু করে ২৫০০০ টাকা রাখেন তাহলে আপনার একাউন্ট থেকে ১০০ টাকা সাথে ভ্যাট কাটা হবে। এছাড়াও আপনি যদি আপনার একাউন্টে ২৫০০১ টাকা থেকে শুরু করে ১০০,০০০ টাকা রাখেন তাহলে আপনারা একাউন্ট থেকে ৩০০ টাকা + ভ্যাট কেটে নেওয়া হবে।
আমাদের শেষ কথা
আমরা এতক্ষণ ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি করার বিভিন্ন সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে জানা এবং ইসলামী ব্যাংকে কয় ধরনের একাউন্ট তৈরি করা যায় সেই সম্পর্কেও জানান এবং খোলার জন্য কি কি কাগজ পাতি প্রয়োজন হয় সেই সম্পর্কেও জেনেছি। এ বিষয়ে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন কারণ আমরা প্রত্যেকের কমেন্ট রিভিউ করি।
সুন্দর তথ্য
অনেক সুন্দর হয়েছে এবং আমি সবকিছু বুঝতে পেরেছি ধন্যবাদ
অনেক কিছু (ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা ও অসুবিধা) জানতে পারলার আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।